করোনাঃ স্বল্প আয়ের মানুষের দুয়ারে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কর্মসূচি    

করোনাঃ স্বল্প আয়ের মানুষের দুয়ারে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কর্মসূচি

করোনাঃ স্বল্প আয়ের মানুষের দুয়ারে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কর্মসূচি

করোনাঃ স্বল্প আয়ের মানুষের দুয়ারে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কর্মসূচি

করোনা ভাইরাসের প্রকোপে দেশ একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এই ভাইরাস মোকাবেলায় সারাবিশ্বের সাথে বাংলাদেশ লক ডাউন পরিস্থিতি অতিবাহিত করছে। সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ একধরনের বন্দী দশায় দিন পার করছেন। সবকিছু আবার কবে স্বাভাবিক হবে পুরোটাই অনিশ্চিত। এই অনিশ্চয়তায় সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন আমাদের দিন মজুর শ্রমিক ভাইয়েরা যারা প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কাজের চুক্তির মজুরি দিয়ে সংসার চালান। প্রতিদিন সূর্য অস্ত যাওয়ার সাথে সাথে আঁধার নামে সেই সাথে এই মানুষগুলোর জীবনেও অনিশ্চয়তা নেমে আসে তারা জানেন না পরদিন সকালে কপালে কাজ জুটবে কি না।

লক ডাউনে সারাদেশের সাথে সাথে এই শ্রেণির মানুষগুলোর জীবনে নেমে এসেছে ভয়ানক অনিশ্চয়তা। তারা কাজ পাচ্ছেন না আবার হাত পেতে কারো থেকে খাবার চাইতেও পারছেন না। পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা এই মানুষগুলোর জন্য কিছু কর‍তে চেয়েছি। স্বেচ্ছাসেবকরা যে যার সামর্থ্য মত অনুদান দিয়ে খাদ্যসামগ্রী ক্রয় করেছি। আমরা ভেবে দেখলাম দিন এনে দিন খাওয়া মানুষ গুলো জীবনের জাঁতাকলে কখনো সারপ্রাইজ পেয়েছিল কি? এই বন্দী দশায় তাদের ঘরে ঘরে গিয়ে অপ্রত্যাশিত উপহার চমক দিলে কেমন হয়! যেমন ভাবনা তেমনি কাজ। সকালে দুপুরে এবং রাতের অন্ধকারে কয়েক শিফটে বের হলাম আমরা। রাতে অনেকে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। দরজায় টোকা দিয়ে তাদের হাতে তুলে দিলাম ২ দিনের সমপরিমাণ খাদ্য সামগ্রী। তাদের অবাক হওয়ার ঘোর কাটার আগেই প্রস্থান করেছি। থাক না কিছু রহস্য মধুর স্মৃতি হয়ে! রিক্সা চালক, কুলি, রেস্টুরেন্ট শ্রমিক, ভ্যান চালক, গৃহকর্মী, থ্রি-হুইলার চালক, বিধবা, স্বামী পরিত্যাক্তা, প্রতিবন্ধী, হিজড়া, চা দোকানী, অস্বচ্ছল সংস্কৃতি কর্মী, বিভিন্ন দোকান শ্রমিক, মেকানিক, হকার, দিনমজুর, ক্ষেতমজুর সহ অন্যন্য সকল নিম্ন আয়ের পেশার মানুষের দুয়ারে পৌঁছাতে চেষ্টা করেছি আমরা। প্রকৃত সাহায্যপ্রার্থীর খোঁজে ছুটে গিয়েছি গ্রাম থেকে গ্রামে।

আলহামদুলিল্লাহ প্রায় দু’শ পরিবারের প্রত্যেকের হাতে ৬ কেজি পরিমাণ খাবার (চাল, আটা, আলু) তুলে দিতে সক্ষম হয়েছি আমরা। প্যাকেজিং, বিতরণকালীন সময়ে এবং বিতরণ শেষে বিধি মোতাবেক সতর্কতার সাথে নিজেদের হাইজিন বজায় রেখেছিলেন স্বেচ্ছাসেবকরা। বিনীত অনুরোধ থাকবে কেউ নেগেটিভ মন্তব্য করার জন্য কমেন্ট করবেন না! দেখেও না দেখার ভান করে ভুলে যান। কৃতজ্ঞ হব। ছেলেগুলো পকেটের অর্থ খরচ করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ভালকিছু করতে চেষ্টা করেছে। অপ্রয়োজনীয় যেকোনো ঋণাত্মক উক্তি বা সাজেশন স্বেচ্ছাসেবকদের মনবলে চিঁড় ধরাতে পারে। এইমুহূর্তে সাজেশন অপ্রত্যাশিত। অগ্রিম দুঃখিত।

সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত রাখতে দেশের অনেক রথি-মহারথিরা যখন হোম কোয়ারেন্টাইনে নিজদের আবদ্ধ করে রেখেছেন তখন ল্যাম্পপোস্ট স্বেচ্ছাসেবকরা জীবনের পরোয়া না করে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন কিছু মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে। সবাই ঘুমিয়ে পড়লে আলো জ্বালাবে কে? যেকোনো জরুরি অবস্থায় নিজেদের জাত চেনানোর মোক্ষম সুযোগ পায় স্বেচ্ছাসেবকবৃন্দ। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে মানব সেবায় ঝাঁপিয়ে পড়ে ল্যাম্পপোস্টের নিবেদিত স্বেচ্ছাসেবকরা শুধু নিজেদের জাত চেনান নি তারা গর্বের সাথেই জানিয়ে দিয়েছেন তারা দেশের অন্যতম সুনাগরিক হওয়ার যোগ্যতা রাখেন। তারা আলোকবর্তিকা। তারা অতন্দ্র প্রহরী। নেতৃত্ব, মেধা, সৃজনশীলতা, তারুণ্য, সাধ সবই আছে। প্রয়োজনীয় সামর্থ্যের যোগান পেলে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বদ্ধপরিকর টিম ল্যাম্পপোস্ট।