করোনাঃ ক্ষুধার্ত বেওয়ারিশ কুকুরদের খাবার বিতরণ কর্মসূচি    

করোনাঃ ক্ষুধার্ত বেওয়ারিশ কুকুরদের খাবার বিতরণ কর্মসূচি

করোনাঃ ক্ষুধার্ত বেওয়ারিশ কুকুরদের খাবার বিতরণ কর্মসূচি

করোনাঃ ক্ষুধার্ত বেওয়ারিশ কুকুরদের খাবার বিতরণ কর্মসূচি

চারিদিকে উৎকন্ঠা। টিকে থাকার লড়াই। জীবাণু যুদ্ধে টিকে গেলে খাদ্য যুদ্ধের লড়াই। এ যেন একই মুদ্রার দুটো পিঠ। মানুষ যখন এতোটা অনিশ্চয়তায় সেখানে রাস্তার বেওয়ারিশ প্রাণী গুলো নিয়ে ভাবার সময় কোথায়! নিজেরা বাঁচলে তবেই না মানবতা। এই পরিস্থিতিতে অপ্রয়োজনীয় কিছু নিয়ে ভাবা বিলাসিতার সামিল। অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইতে এই প্রাণীগুলো এখন সবচেয়ে অবহেলিত সবচেয়ে বিপদগ্রস্ত। বাজার বন্ধ, রেস্তোরাঁ বন্ধ, সকল খাবার দোকান বন্ধ। জনমানবশূন্য শহরে ডাস্টবিন ফাঁকা। পঁচাগলা উচ্ছিষ্ট খাবার কোথায়? খাবারের সন্ধানে তারা দল বেঁধে অলিতে-গলিতে ঘুরে। রাত জেগে সমস্বরে আর্তনাদ করে। গৃহবন্দী মুনিবদের কানে নিরীহ চিৎকার আর পৌঁছায়না। ক্ষুধা হিংস্র করে তোলে। জলজ্যান্ত মুরগি, ছাগলের বাচ্চা কিংবা আস্ত হরিণ খেয়ে ফেলে তারা!

মানুষকে বাদ দিলে বেওয়ারিশ কুকুর গুলো এখন অন্যতম অসহায় একটি প্রাণী। এরা আমাদের সমাজেরই অংশ। এরা কখনো আমাদের বিশ্বস্ত প্রহরী আবার কখনো প্রাকৃতিক পরিচ্ছন্নতা কর্মী। আধুনিক মানব সভ্যতায় ক্ষুধার্ত অবস্থায় কোনো প্রাণী মারা যাবে এটা মেনে নেয়া অসম্ভব! তাই নিজস্ব সামর্থ্য থেকে কিছু করার তাগিদ অনুভব করেছি আমরা। রাতদিন পর্যায়ক্রমে টানা সাতদিন প্রায় ৭০ টি বেওয়ারিশ কুকুরকে খাওয়ানোর মানবিক দায়িত্ব পালন করেছে ল্যাম্পপোস্ট এর নিবেদিত স্বেচ্ছাসেবকবৃন্দ। রেল স্টেশন, বাস টার্মিনাল, বাজার, ডাস্টবিন চত্বর, বিভিন্ন পাড়ার মোড় সহ সম্ভাব্য সকল স্থানে খাবার নিয়ে পৌঁছে গেছেন স্বেচ্ছাসেবকরা। খাওয়াতে গিয়ে পথচারীদের অবাক দৃষ্টি কিংবা তীর্যক উক্তি কিছুই চোখকান এড়ায়নি। আমাদের আত্মতুষ্টি ছিল নতুন কিছু সফলভাবে করার জন্য। বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই রঞ্জু ভাইকে যিনি এই লক ডাউনের মাঝে নিজের ঐতিহ্যবাহী “ইন্তু রেস্তোরাঁ” বন্ধ থাকা অবস্থাতে শুধু কুকুর গুলোর জন্য নিজ হাতে শত শত পুরি তৈরি করে দিয়েছেন এবং নিজেও দান করেছেন৷ এই উদ্যোগকে সফল করেছেন। এভাবে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সভ্যতার দুঃসময়ে বাঁচুক অবহেলিত প্রাণীগুলোর প্রাণ। নিজ সামর্থ্যে প্রতিনিয়ত এমন কিছু করার চেষ্টা করি যেন প্রমাণ হয় সত্যিকার অর্থেই মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব।

আপনারা ঘরে থাকুন। আমাদের স্বেচ্ছাসেবকবৃন্দ নিজেদের জীবন বিপন্ন করে হলেও দায়িত্ব কর্তব্য আর পাহাড়সম প্রত্যাশা কাঁধে চেপে এঁকে যাবে মনুষ্যত্বের শেষ চিহ্নটুকু।